1. [email protected] : Admin : sk Sirajul Islam siraj siraj
  2. [email protected] : admi2017 :
  3. [email protected] : Sk Sirajul Islam Siraj : Sk Sirajul Islam Siraj
  • E-paper
  • English Version
  • রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৯:৩৪ অপরাহ্ন

ব্রেকিং নিউজ :
বিনোদন :: গান গাইতে গাইতে মঞ্চেই গায়কের মর্মান্তিক মৃত্যু!,  খেলার খবর : অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ, বিমানবন্দরে যুবাদের জানানো হবে উষ্ণ অভ্যর্থনা,

অন্ধ স্বামীকে ছেড়ে গেলেন স্ত্রী, শেষ ভরসা বৃদ্ধা মা

  • আপডেট টাইম : শুক্রবার, ৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২২
  • ৪২৮ বার পঠিত

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি : স্বামী ও স্ত্রী একে অন্যের সঙ্গী, সহযাত্রী, সহায়ক ও পরিপূরক। বলা হয় দুটি মনের একটি আত্মা, একটি বন্ধন। দাম্পত্য জীবনে স্বামী ও স্ত্রীর রয়েছে নির্দিষ্ট অধিকার ও কর্তব্য। আর স্ত্রী ও পরিবারের প্রতি সেই কর্তব্য পালন করতে গিয়ে ভোলাগঞ্জে পাথর খোয়ারিতে শ্রমিকের কাজ নেন রাজিন্দ্র দাস। কিন্তু হঠাৎ একদিন কাজ করতে গিয়ে দুর্ঘটনায় অন্ধ হন রাজিন্দ্র। অন্ধ স্বামীর সাথে সংসার করবে না বলে সন্তান নিয়ে চলে যান তারই স্ত্রী। অন্ধ স্বামীর পাশে স্ত্রী না থাকলেও ছেলের অন্ধকার ভুবনে আলো হয়ে পাশে দাঁড়ান তাঁরই বৃদ্ধ মা ছায়া রানী দাস। এমনি একটি অমানবিক ঘটনার সন্ধান পাওয়া গেছে সুনামগঞ্জের দিরাইয়ে।

দিরাই উপজেলার কালনী নদীতে কালধর গ্রামের খেয়া ঘাটে দেখা যায়- অন্ধ খেয়ামাঝি রাজিন্দ্র দাস (৫০) নৌকা বেয়ে যাত্রী পাড় করছেন। পাশে বসে আছেন তার বৃদ্ধা মা। বৃদ্ধ মা মায়া রানী দাস অন্ধ ছেলেকে দিকনির্দেশনা দিচ্ছেন। ‘ডাইনে যা, বায়ে ল, আরেকটু উজানে বাইয়া যা, অইলো এবার থাম।’

অন্ধ হয়েও এই বয়সে কেন তিনি মাঝির কাজ করছেন এমন প্রশ্নের উত্তরে রাজিন্দ্র দাস বলেন, সুখের দিনে আমার সাথে সন্তান, স্ত্রী সবাই ছিল। কিন্তু আজ আমার পাশে বৃদ্ধা মা ছাড়া আর কেউ নেই। তিনি বলেন, সংসারে অভাব থাকলেও ৩ ছেলে আর স্ত্রীকে নিয়ে বেশ সুখেই ছিলাম। আমাদের খুব সুখেই দিন যাচ্ছিল। কিন্তু আচমকা এক দুর্ঘটনায় বদলে যায় আমার জীবন।

রাজিন্দ্র দাস জানান, প্রায় ২৫ বছর আগে সিলেটের সীমান্তবর্তী কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ভোলাগঞ্জে পাথর খোয়ারিতে শ্রমিকের কাজ করতেন তিনি। সে সময় কাজ করতে গিয়ে একদিন আচমকা উপর থেকে গড়িয়ে পরা পাথরের আঘাতে মারাত্নক আহত হন তিনি। সে যাত্রায় বেঁচে গেলেও দু’চোঁখের আলো নিভে যায় তাঁর। পুরোপুরি অন্ধ হয়ে যান তিনি রাজিন্দ্র দাস।

দুর্ঘটনার কিছুদিনের মধ্যেই বদলে যেতে থাকে তার স্ত্রীর আচারণ। নিষ্ঠুর, অমার্জিত এবং অসম্মানজনক আচরণ করতে থাকে তার স্ত্রী। রাজিন্দ্রকে বোঝা মনে করে তিন ছেলে নিয়ে চলে যান তার স্ত্রী প্রীতি রানী দাস। আর ফেরেননি। খোঁজও নেননি। নিজেকে হতভাগা উল্লেখ করে রাজিন্দ্র বলেন, সবাই ছেড়ে গেলেও ছেড়ে যায়নি আমার বৃদ্ধ মা। মা না থাকলে রাস্তায় পরে থাকতো হতো। হয়তো আমার জন্যই মাকে সৃষ্টিকর্তা বাঁচিয়ে রেখেছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দিরাই উপজেলার করিমপুর ইউনিয়নের চান্দপুর বিজয়নগর গ্রামের বাসিন্দা মৃত জগত দাসের তিন ছেলের মধ্যে ছোট রাজিন্দ্র দাস (৫০)। বড়ভাই হরিন্দ্র দাস মারা যাওয়ার পর তার পরিবার সিলেট শহরে চলে যায়। আরেক ভাই গীরেন্দ্র দাস দিরাই পৌর শহরে পরিবার নিয়ে বসবাস করেন। ফুটপাতে চা বিক্রি করেন গীরেন্দ্র। ইচ্ছে থাকার পরও আর্থিক সামর্থ্য না থাকায় রাজিন্দ্রর দুর্দিনে কোনো ভাই এগিয়ে আসতে পারেননি।

ছায়া রানী বলেন, ‘আমার অন্ধ পুতরে আমি কীভাবে ছাইড়া যাইতাম। দেখারতো কেউ নাই। তারে লইয়াই আমি আছি।’

তিনি বলেন, ‘আমার বয়স ১শ‘র উপরে। এখনো হাঁটাচলা করি, চোখেও দেখি। হয়তো সৃষ্টিকর্তা আমার অন্ধ পুতের লাগি আমারে এখনো ভালো রাখছইন।’

 

প্লিজ আপনি ও অপরকে নিউজটি শেয়ার করার জন্য অনুরোধ করছি

এ জাতীয় আরো খবর..